নিজস্ব প্রতিবেদক:
নিশি অবসান, ওই পুরাতন বর্ষ হয় গত! মহাকালের অমোঘ নিয়মে ইতিহাসের পাতা থেকে বিদায় নিল আরেকটি বছর। শুরু হল ইংরেজি নতুন বর্ষ ২০২৩ সালের প্রথম দিন। আনন্দ-বেদনা, সাফল্য-ব্যর্থতা, আশা-নিরাশা, প্রাপ্তি-প্রবঞ্চনার হিসেব-নিকাশ পেছনে ফেলে নতুন বছরকে স্বাগত জানাই আগামী দিনের নতুন স্বপ্নে সোনালি প্রত্যাশার পাখা মেলে। বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কথায়, ‘বন্ধু হও, শত্রু হও, যেখানে যে কেহ রও,/ ক্ষমা করো আজিকার মতো,/পুরাতন বর্ষের সাথে/পুরাতন অপরাধ যত।’ আমাদেরও প্রত্যাশা পুরনো বছরের যত ব্যর্থতা-বেদনা, হতাশা-নিরাশা এমনি করে ক্ষয় হোক আবর্ত আঘাতে।
কবি সুফিয়া কামাল লিখেছেন, ‘ অনন্ত সূর্যাস্ত-অন্তে আজিকার সূর্যাস্তের কালে/সুন্দর দক্ষিণ হস্তে পশ্চিমের দিকপ্রান্ত-ভালে/দক্ষিণা দানিয়া গেল, বিচিত্র রঙের তুলি তার/বুঝি আজি দিনশেষে নিঃশেষে সে করিয়া উজাড়/দানের আনন্দ গেল শেষ করি মহাসমারোহে।
পুরনো বছরের ভুলগুলো শুধরে সমস্ত ইতিহাস থেকে ভালো ভালো শিক্ষা গ্রহণ এবং অতীতের সফলতা-ব্যর্থতাকে পুনর্মূল্যায়নের মাধ্যমে সুন্দর ভবিষ্যৎ বিনির্মাণের লক্ষ্যে আমাদের সামনের দিকে দৃপ্ত পদক্ষেপে এগিয়ে যেতে হবে।
বাংলাদেশের মানুষ অর্থাৎ বাঙালি অন্যদের তুলনায় এই ভেবে অনায়াসে গর্ব করতে পারে যে, তাদের একটি নিজস্ব বর্ণমালা এবং একটি বর্ষপঞ্জি রয়েছে, যা বিশ্বের অনেক বিখ্যাত জাতিরও নেই। নিজস্ব বর্ষপঞ্জি থাকার কারণে বাঙালি বছরে দু’বার বর্ষবরণ করে, তার একটি পয়লা বৈশাখ। আরেকটা হলো ১লা জানুয়ারি। বাঙালি একবার বলে শুভ নববর্ষ। আরেকবার বলে হ্যাপি নিউ ইয়ার।
চিরসংগ্রামী, লড়াকু ও আশাবাদী মানুষের প্রত্যাশা সব ধরনের স্থবিরতা কাটিয়ে নতুন বছর সবার জীবনে বয়ে আনবে অনাবিল আনন্দ। এ দেশে ফিরে আসবে শান্তি, সমৃদ্ধি, স্বস্তি, গতিময়তা। নতুন আশার আলো প্লাবিত করবে দিক-দিগন্ত।
নতুনের প্রতি সবসময়ই মানুষের থাকে বিশেষ আগ্রহ ও উদ্দীপনা। নতুনের মধ্যে নিহিত থাকে অমিত সম্ভাবনা। সেই সম্ভাবনাকে বাস্তবে রূপায়ন করার সুযোগ করে দিতে এলো নতুন বছর।
মহাকালের অতলে হারিয়ে গেলো আরো একটি বছর। সময়ের চক্রে আর কখনোই ফিরবে না ২০২২ সাল। তবে বছরটির রেখে যাওয়া স্মৃতি-বিস্মৃতি আলোড়িত হবে প্রকৃতি-পরিবেশ-মনুষ্য সভ্যতায়। আজি নব-বর্ষ-প্রভাতে ভিক্ষা চাহি মার্জনা সবার। আবারও সবাইকে জানাই ইংরেজি নতুন বছরের প্রাণঢালা শুভেচ্ছা। শুভ হোক ইংরেজি নববর্ষ।